SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

এসএসসি(ভোকেশনাল) - পোল্ট্রি রিয়ারিং অ্যান্ড ফার্মিং-২ - দ্বিতীয় পত্র (দশম শ্রেণি) | NCTB BOOK

রাজহাঁসের ডিম এবং বাচ্চা উৎপাদন

সাধারনত রাজহাঁসের ডিম পাড়ার সময় কান্ত কালে অর্থাৎ আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর মাসে কিন্তু চাইনিজ রাজহাঁস সারা বছর ডিম পেড়ে থাকে। এক বছরের নিচে বরসের রাজহাঁসের ডিমের চেরে এক বছরের চেয়ে বেশি বয়সের রাজহাঁসের ডিমের উর্বরতা এবং বাচ্চা ফোটার হার বেশি হয়।

রাজহাঁস সাধারণত সকাল বেলা ডিম পেড়ে থাকে। তাই রাজহাঁসকে খুব সকাল বেলায় পানিতে ছেড়ে দেয়া যাবে না। সকাল বেলায় ছেড়ে দিলে ডিম উৎপাদন কমে যাবে, কারণ রাজহাঁস বাইরে গিয়ে পানিতে ডিম পাড়বে ফলে ডিম পাওয়া যাবে না। হাঁসগুলো সকাল ৯.০০ টার সমর ছাড়তে হবে।

রাজহাঁস বছরে বিভিন্ন ক্লাচে এ ডিম দিয়ে থাকে। ক্লাচ ফল কয়েকটি ডিম পেড়ে আবার কিছুদিন বিরতি দিয়ে আবার ডিম পাড়া শুরু করে। ডিম পাড়া শুরু করলে টানা যে কয়েকদিন ডিম দেয় তা একটি ক্লাচ। রাজহাঁস এক ক্লাচে ১২-১৫ টি ডিম পাড়ে এবং পরে ডিমে তা দেয়ার জন্য ব্রুডিং বা কুঁচে হয়ে যায়।

শ্রেণির তাত্ত্বিক কাজ

  • ক্লাচ কী?
  • রাজাহাঁস এক ক্লাচে কতটি ডিম দেয় ? 
  • কত বছর বয়সের রাজহাঁসের ডিমের উর্বরতা বেশি হয় ।

বাচ্চা উৎপাদন : 

রাজহাঁসের বাচ্চা উৎপাদনের জন্য ২ (দুই) ভাবে ডিম ফোটানো যায় যথা : 

ক) প্রাকৃতিক উপায়ে 

খ) কৃত্রিম উপায়ে।

ক) প্রাকৃতিক উপায়ঃ

প্রাকৃতিক উপায়ে ডিম ফোটানোর জন্য কুঁচে মুরগি এবং কুচে রাজহাঁস ব্যবহার করা হয়। কুঁচে মুরগি বা রাজহাঁস দ্বারা ডিম ফোটানোর জন্য প্রথমে একটি বাসা তৈরি করতে হয়। বাসা তৈরি করার জন্য ফলের ঝুড়ি বা মাটির গামলা বা কাঠের তৈরি বাসা ব্যবহার করা যায়। মুরগি বা রাজহাঁসের দেহের আকার অনুযায়ী বাসা তৈরি করতে হয়। ঝুড়ি, গামলা বা কাঠের বাক্সে খড়, কুটা বিছিয়ে দিতে হবে। যখন মুরগি দিয়ে ডিম ফোটানো হবে তখন একটি মুরগির নিচে ৪-৬ টি ডিম দেয়া যাবে কারণ মুরগির ডিমের চেয়ে রাজহাঁসের ডিম অনেক বড়। অনেক বড় বিধায় মুরগি নিজে ডিম ঘুরাতে পারে না তাই প্রতিদিন নিজে হাতের মাধ্যমে ঘুরিয়ে দিতে হবে; যখন মুরগি বাসা থেকে খাবার সংগ্রহ ও পানি পানের জন্য বাসা ছেড়ে বাইরে যায়। ১৫ দিন পর ডিমগুলোর উপর দৈনিক একবার কুসুম গরম পানি ছিটিয়ে দিয়ে ডিম ঘুরিয়ে দিতে হবে। ১০ তম দিনে ডিমগুলোকে ক্যান্ডেলিং করতে হবে। ক্যান্ডেলিং-এর জন্য উজ্জ্বল ইলেকট্রিক লাইটের নিচে ধরলে এর ভেতরের সবকিছু দেখা যাবে। ক্যান্ডেলিং করে যে ডিমগুলো অনুর্বর হবে তা বাদ দিতে হবে। তারপর কমপক্ষে ৩০ দিনের নিচে ডিম ফুটবে না ৩০-৩২ তম দিনের মধ্যে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে বের হয়ে আসবে। যখন কুঁচে হিসেবে রাজহাঁস ব্যবহার করা হবে তখন একটি রাজহাঁসের নিচে ১০-১৫ টি ডিম বসানো যাবে। তবে তা নির্ভর করে ডিমের আকার এবং রাজহাঁসের আকারের উপর। যদি কুঁচে রাজহাঁসের পানিতে সাঁতরানোর যথেষ্ট সুবিধা থাকে তবে ১৫ দিন পর থেকে পানি ছিটিয়ে দেয়ার প্রয়োজন হবে না।

শ্রেণির তাত্ত্বিক কাজ

  • রাজহাঁসের ডিম হাতের মাধ্যমে ঘুরাতে হয় কেন? 
  • হ্যাচিং-এর সময় তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা কত রাখতে হয় ? 
  • ডিমের উর্বরতার হার ৯০% হলেও ইনকিউবেটরে রাজহাঁসের ডিমের ফোটানোর হার ৪০% এর বেশি হয় না কেন ?

 

কৃত্রিম উপায়ে রাজহাঁসের ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানো

যদি ইনকিউবেটর সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করা না যায় তবে ইনকিউবেটরে রাজহাঁসের ডিম ভালোভাবে ফোটে না। যদিও ডিমের উর্বরতার হার ৯০% তবুও প্রায়ই ইনকিউবেটরে রাজহাঁসের ডিমের ফোটানোর হার ৪০% এর বেশি হয় না। কারণ রাজহাঁসের ডিম ফোটানোর জন্য বিশেষভাবে ইনকিউবেটর প্রস্তুত করতে হয় ।

ইনকিউবেটর এ দুইটি ভাগ থাকে। একটি হল ইনকিউবেশন পিরিয়ড অন্যটি হল হ্যাচিং পিরিয়ড। রাজহাঁসের ক্ষেত্রে ডিম বসানো থেকে ২৬ তম দিন পর্যন্ত হল ইনকিউবেশন পিরিয়ড, ২৬তম দিনে ডিম স্থানান্তর করে হ্যাচিং ট্রেতে দেয়া হয় তখন থেকে বাচ্চা ফোটা পর্যন্ত সময় হল হ্যাচিং পিরিয়ড। ডিম বসানোর পর প্রতিদিন কমপক্ষে চারবার ডিম সম্পূর্ণরূপে ঘুরিয়ে দিতে হবে। ১৫তম দিনের পর থেকে ডিমকে সম্পূর্ণরূপে ৩৭.৫ সে. তাপমাত্রায় পানি দিয়ে স্প্রে করে দিতে হবে দিনে একবার ।

২৭ তম দিনে ডিমগুলো সেটার থেকে হ্যাচারে স্থানান্তর করতে হবে। রাজহাঁসের ডিম ৩০ দিনের কম সময়ে ফোটে না। হ্যাচিং-এর সময় তাপমাত্রা রাখতে হবে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আর্দ্রতা রাখতে হবে প্ৰায় ৮০%। যখন বাচ্চা ফোটা আরম্ভ করে তখন তাপমাত্রা কমিয়ে ৩৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আর্দ্রতা ৭০% রাখতে হবে। সম্পূর্ণ বাচ্চা ফোটার ২-৪ ঘন্টা পর হ্যাচারি থেকে বের করে ব্রুডারে দেয়া হবে।

 

 

Content added By